









প্রকৃতির এমন অনেক বিস্ময় আছে যা জানা বা ছুঁয়ে দেখা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। হয় সেখানে যাওয়া দুর্গম নইলে সেখানে গেলেও অপেক্ষা করছে বড়ো বিপদ। তাই প্রকৃতির অপরূপ লীলার স্তরে স্তরে কোন মায়া আছে তা দূর থেকে বোঝা খুব মুশকিল। এমন অনেক জায়গা আছে যা আপাতভাবে সুন্দর ও আকর্ষণীয়। কিন্তু সেখানে গেলে প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরে আসাটা একটা চ্যালেঞ্জ। যেমন ইন্দোনেশিয়ার এই দ্বীপে গেলে বেঁচে ফেরাটা কার্যত দুস্কর।





ইন্দোনেশিয়ার অন্তর্ভূক্ত জাভা দ্বীপের সৌন্দর্যও মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। তবে মাথায় রাখতে হবে এটাও যে এই স্থানটি বিষাক্ত। একটি মৌলিক পদার্থ জায়গাটিকে করে রেখেছে বিষময়। কাওয়াহ ইজেন অঞ্চলটি আসলে একটি ডুবন্ত আগ্নেয়গিরির মাথার অংশ। রয়েছে জাভা সাগর এবং ভারত মহাসাগরের সংযোগস্থলে। এখানে জায়গায় জায়গায় একাধিক জ্বালামুখ রয়েছে আপনার অজান্তেই। সেখান থেকে ক্রমাগত নির্গত হচ্ছে বিষাক্ত সালফার। রাতের অন্ধকারে এইদিকে তাকালে মনে হবে যেন উত্তপ্ত লাভার স্রোত থেকে নীল আলোর ছটা বেরোচ্ছে।





এই সালফার মিশে আছে সেখানকার জলেও। তাই এর রঙ এমন অদ্ভুত ফিরোজা। জ্বলামুখ থেকে নির্গত হওয়ার সময় সালফারের বর্ণ থাকে লাল। এরপর ঠান্ডা হলে সেটি দিনের আলোয় হলুদ রঙ ধারণ করে। জ্বালামুখ থেকে বেরোতেই বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়ায় এর তাপমাত্রা দাঁড়ায় ৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আস্তে আস্তে ঠান্ডা হতে হতে সালফার ডাই অক্সাইডের ইলেকট্রনগুলো নীল হতে থাকে। এই অদ্ভুত রহস্য উন্মোচনের পর থেকে জায়গাটির প্রতি পর্যটকদের লোভ বেড়ে গেছে। কিন্তু শুধু মানুষ না, যে কোনো প্রাণীর পক্ষেই সেখানে থাকাটা অস্বাস্থ্যকর ও ক্ষতিকারক। হ্রদের তলায় যে সালফার রয়েছে তা জলের সংস্পর্শে এসে সালফিউরিক এসিডে পরিণত হয়। আবার প্রচুর ক্লোরিন গ্যাসও নির্গত হতে থাকে।





জল এতটাই গরম থাকে যে তা স্পর্শ করলেই পুড়ে যাবে চামড়া। এতো ভয়ঙ্কর হওয়া সত্বেও স্থানীয় বাসিন্দারা সালফার সংগ্রহ করতে এখানে আসে। এতেই তাদের জীবন চলে।














