







আম্ফানের তান্ডবে সবকিছু চুড়মার! এগিয়ে চলার লড়াইয়ে থামেনি টুম্পা! পরীক্ষা দিতেই হবে – উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, হিঙ্গলগঞ্জ, বসিরহাট, বাদুড়িয়া, স্বরূপনগর ব্লকের যে সব অংশ সুন্দরবন লাগোয়া সেই সব এলাকা এখনও জলের তলায়।
খাবারের পাশাপাশি এইসব এলাকায় দেখা দিয়েছে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট। এই অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ২৮ জুন উচ্চমাধ্যমিক শুরু হবে। ২০ মে এরাজ্যে আছড়ে পড়ে ঘুর্ণীঝড় উমফান।




তার আগেই সুন্দরবন অঞ্চলের বাসিন্দাদের ত্রাণশিবিরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল প্রশাসন। এখন গ্রামের পর গ্রাম জলের তলায়। লক্ষ লক্ষ মানুষ ত্রাণশিবিরে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরাও। প্রিয়তমা, সুমনা, নার্গিস, বাবুসোনারা এ বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।
ইছামতি নদীর বাঁধ ভেঙে এঁদের বই-খাতা, উচ্চমাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশন — সব জলে ভেসে গেছে। কেউ খোলা আকাশের নীচে আর কেউ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। জীবন বাঁচানোর লড়াই লড়তেই তাঁরা ব্যস্ত। পরীক্ষার কথা ভেবে কুল পাচ্ছেন না। বিদ্যুৎ এখন দূরঅস্ত্। পানীয় জল আর খাবার জোটানোই মুশকিল।




এই অবস্থায় আবার পড়াশোনা! এরই মাঝে লড়াই থামায়নি টুম্পা।আম্পানের দাপটে উড়ে গিয়েছে বাড়ি। ছিঁড়ে গিয়েছে বই খাতা।জলে সাফ হয়ে গিয়েছে নোটস। তবুও উচ্চ মাধ্যমিকের বাকি পরীক্ষা দিতে বদ্ধপরিকর উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার মেহেরানীর টুম্পা রায়।সব হারানো গলায় টুম্পা বলে,”বন্ধুদের কাছে আবার নোটস আবার জোগাড় করে নিতে পারবো।




কথা হয়ে গিয়েছে।আমাদের মতো সংসারে অনেক কষ্ট করে পড়া চালিয়ে যাচ্ছি।কোনও ভাবে একটা বছর নষ্ট করা যাবেনা।” সময় যত যাচ্ছে উমফানের ধ্বংসলীলার ছবিও তত স্পষ্ট হচ্ছে। ঝড়ের তাণ্ডবে বাড়ি ভেঙে পড়েছে। কোথাও চাল উড়ে গেছে। বই-খাতা নদীর জলে ভেসে গেছে। লকডাউনের জন্য মজুত করে রাখা চালও নদীর জলে ভেসে গেছে।




চোখে মুখে এখন সকলের হতাশা আর আতঙ্কের ছাপ। এরই মধ্যে পানীয় জল ও বিদ্যুতের দাবিতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে পথ অবরোধ। বসিরহাট ২ নম্বর ব্লকের মাটিয়া থানার শিকড়া কুলিনগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের শিকড়া কুলিনগ্রামে টাকি রোড অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার বেলা বারোটা থেকে অবরোধ শুরু হয়।




রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে যায় মাটিয়া থানার পুলিশ। বসিরহাট মালঞ্চ রোডের পিফায় পানীয় জল ও বিদ্যুতের দাবিতে কয়েকশো গ্রামবাসী রাস্তা অবরোধ করেন। উমফানের সাত দিন পরে বিদ্যুৎ ও
পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র হওয়ায় কংগ্রেস নেতা কাদের সরদারের নেতৃত্বে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা রাস্তার উপরে মাটির হাঁড়ি-কলসি নিয়ে সকাল থেকে অবরোধ শুরু করেন একই দাবিতে। ঘটনাস্থলে বসিরহাট থানার পুলিশ গেছে।



















