







করোনা ভাইরাস টেস্ট ছাড়া হাসপাতালে ঢুকতে পারবেন না কোনও মুসলিম। এমনই নিদান জারি করেছিল উত্তরপ্রদেশের মেরঠের এক ক্যান্সার হাসপাতাল। গচ সপ্তাহে এই মর্মে একটি বিজ্ঞাপনও দেয় তাঁরা। তাতে বলা হয়েছিল কোনও মুসলিম রোগি ভর্তি হতে এলে, তাঁর করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করাতে হবে। শুধু তাই নয়, পরীক্ষা করাতে হবে তাঁর পরিবারের লোকজনকেও। টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ এলে তবেই তাঁকে ভরতি নেওয়া হবে।




স্থানীয় এক সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞাপন বেরোনোর পরেই জলঘোলা শুরু হয়। শুরু হয় চরম বিতর্ক। এই বিজ্ঞাপন ছাড়েনি হিন্দু ও জৈনদেরও। তাদের ‘কৃপণ বড়লোক’ বলে দাবি করে দোষারোপ করা হয়েছে। এরই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ফান্ডে অনুদান দেওয়ারও দাবি করা হয়েছে। তবে হাসপাতালের তরফে ভর্তির সময় অনুদান দাবি করা হয়েছে কি না তা জানা যায়নি।




হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে। পরে ওই বেসরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে সাফাই দিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এজন্য দ্বিতীয় একটি বিজ্ঞাপনও বের করা হয় সংবাদপত্রটিতে। তবে লাভ হয়নি। হাসপাতালের মালিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে জাতি বিদ্বেষ ও অন্যের ধর্মের ভাবাবেগকে আঘাত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।




এর আগে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন কড়া বার্তা দিয়েছিলেন করোনা পরিস্থিতিতে কোন হাসপাতাল রোগি ফিরিয়ে দিলে, সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করার সময় এই বক্তব্য রাখেন তিনি। এই ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বইজল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির সুপাররা।




কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন তাঁর কাছে রোগি ফিরিয়ে দেওয়ার একাধিক অভিযোগ আসছে। এই ঘটনাগুলি সত্যতা প্রমাণিত হলে, হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্র। জরুরি অবস্থায় কোনও রোগি এলে, তাঁকে কোনও ভাবেই অন্য হাসপাতালে পাঠানো যাবে না। এতে রোগির প্রাণ সংশয় হতে পারে, জীবনের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। করোনা আক্রান্ত ছাড়াও যেসব রোগি রয়েছেন, তাদের যথাযোগ্য দেখভাল করার নির্দেশ দেওয়া হয় হাসপাতালগুলিকে।




স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন এক কঠিন সময়ের সঙ্গে লড়াই করছে গোটা দেশ। মানুষ অনেক কষ্টে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালে আসছেন। এই পরিস্থিতিতে তাদের ফেরানো যাবে না। ব্লাড ট্রান্সফিউশন, ডায়ালিসিসের মতো পরিষেবাগুলি চালু রাখা দরকার। শুধু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই নয়, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যিনি রোগি ফেরাচ্ছেন।











