







করোনার ভয়ঙ্কর ছোবলে বিপর্যস্ত বিশ্ব। এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় দুই লাখ মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার। ভারতেও থাবা বসিয়েছে করোনা। দেশটিতে আজ বুধবার (১৮ মার্চ) পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১৫৬ জন, মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। করোনার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এবার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যে কার্যকর হয়েছে ১৮৯৭ সালের ‘দ্য এপিডেমিক ডিজিজেস অ্যাক্ট’ বা মহামারি (প্রতিরোধ) আইন।




দিল্লি আগেই রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে প্রয়োজনে এই আইন বলবৎ করার পরামর্শ দিয়েছিল। ১২৩ বছরের পুরোনো এই আইনই কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের মতো সংক্রামক রোগ মোকাবেলায় সরকারের সবচেয়ে বড় আইনি অস্ত্র। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আক্রান্ত কেউ যাতে চিকিৎসায় ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যেতে না-পারেন বা যাতে কেউ অসহযোগিতা না-করেন, সেটা নিশ্চিত করাই এই আইন প্রয়োগের উদ্দেশ্য।’




পশ্চিবঙ্গ-সহ ভারতের অনেক জায়গাতেই এই আইনের দুই নম্বর ধারায় রাজ্য সরকারগুলিকে মহামারী মোকাবিলায় যে কোন ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই আইনে বলা আছে মহামারী ঠেকাতে যদি এমন কোন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন হয়, যার জন্য কোন আইনি অধিকার সরকারের হাতে নেই, তা হলেও এই আইনের উপরে ভিত্তি করে সরকার সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।




কেউ যদি নিজের বা পরিচিত কারও করোনায় আক্রান্তের খবর ইচ্ছে করে গোপন করেন তবে তাকে গ্রেফতারও করা যেতে পারে। এই আইনে যে সাজার কথা বলা হয়েছে তাতে অসুখের তথ্য গোপন করার জন্য ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে। এছাড়াও অন্যের দেহে সংক্রমণ ছড়িয়েছেন এমন আভিযোগ প্রমাণ হলে জেল-জরিমানার পাশাপাশি সংক্রমিত ব্যক্তির চিকিৎসার খরচ এবং ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারবে সরকার।




সম্প্রতি এই আইন বলে লখনউতে এক ব্যক্তি ও তার পুত্রবধূকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। জানা গেছে, গুগল ইন্ডিয়ার এক করোনা আক্রান্ত কর্মীর স্ত্রী ও বাবাকে মহামারি প্রতিরোধ আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই গুগল কর্মীর স্ত্রীকে রেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেখান থেকে তিনি পালিয়ে যান তার লালরসের পরীক্ষা রিপোর্ট আসার আগেই। এই গোটা বিষয়টা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে অসহযোগিতা বলেই মনে করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৬৯ ও ২৭০ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
১৮৯৬ সালে বোম্বেতে ‘প্লেগ’ রোগের প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ ভারতে ১৮৯৭ সালে তৈরি হয় মহামারি আইন।











