







করোনাভাইরাস মারণ থাবা বসিয়েছে ভারতেও। তিনজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই রহস্যময় ভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ঠেকাতে এরই মধ্যে ১৩০ কোটি মানুষ অধ্যুষিত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ ভারতজুড়ে সিনেমা হল, বেশিরভাগ স্কুল এবং বিনোদনকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। করোনা আতঙ্কে পর্যটকদের কাছে আর্কষণীয় অনেক জায়গাও বন্ধ করে দিয়েছে ভারত সরকার।




সাবধানতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাজমহল, ফতেপুর সিক্রি, আগ্রা ফোর্ট, লাল কেল্লা, কুতুব মিনারসহ দেশের সব দর্শনীয় স্থাপত্য এই মাসের শেষ দিন পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারত সরকারের পুরাতাত্ত্বিক নিরীক্ষণ বিভাগের (এএসআই) অধীনে মোট ৩ হাজার ৭০০ স্থাপত্য রয়েছে, যেগুলো আপাতত বন্ধ থাকবে। ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনা ভাইরাস মহামারি রূপে দেখা দেওয়ায় এর সংক্রমণ রুখতে আপাতত দর্শকদের জন্যে বন্ধ রাখা হবে বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য তাজমহলের প্রবেশ দ্বার। সোমবার গভীর রাতে পর্যটনমন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেল টুইট করে জানান, দেশের সমস্ত স্মৃতিসৌধ এবং যাদুঘর আপাতত আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।




এর আগে মাত্র দু‘বার তাজমহল বন্ধ হয়েছিল। এরমধ্যে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত যুদ্ধ ঘোষণা করলে ১৫ দিনের জন্য বন্ধ করা হয় তাজমহল। এরপর ১৯৭৮ সালে বন্যা হলে সাত দিনের জন্য বন্ধ করা হয় আগ্রার তাজমহল। তারপর আর বন্ধ হয়নি বিশ্বের এই সপ্তম আশ্চর্য। কিন্তু করোনার কালো থাবায় ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে তাজমহল।
এদিক, ভারত বিদেশি পর্যটকদের যাওয়ার ক্ষেত্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউরোপীয়ান ফ্রি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন, তুরস্ক ও ব্রিটেন থেকে যাত্রী নিয়ে আসা সমস্ত বিমান বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এছাড়ও সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান ও কুয়েত থেকে আগত মানুষজনকে ভারতে পৌঁছানোর পর বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের জন্যে কোয়ারান্টাইন করে রাখা।




চীন, ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, স্পেন এবং জার্মানি থেকে ভারতে যাওয়া মানুষজনের ক্ষেত্রেও একই ধরনের বিধি-নিষেধ প্রযোজ্য, অন্যদিকে প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে ভারতে যাওয়ার সীমান্ত অঞ্চলগুলো আপাতভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
এই মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। এই মহামারির প্রভাবে দীর্ঘদিন অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আরবিআই। এর ফলে ভারতের বিকাশের গতি আরো কিছুটা প্রভাবিত হবে। তাজমহল বন্ধের সিদ্ধান্তের পর সোমবার এক জরুরি বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এই মহামারির প্রভাবে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ এক ট্রিলিয়ন রুপি বা ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।











