ওষুধ ও টিকা আবিষ্কার না হওয়ায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রাথমিক সচেতনতার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন চিকিৎসকরা। আসুন জেনে নেই চিকিৎসকদের সেই পরামর্শগুলো।
> যে কোন ভাইরাস প্রতিরোধে চিকিৎসকেরা হাত ধোয়ার ওপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। কোভিড-১৯ প্রতিরোধেও একই পরামর্শ তাদের। চিকিৎসকেরা বলছেন, ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাবান দিয়ে অন্তত বিশ সেকেন্ড হাত ভাল করে পরিষ্কার করা উচিৎ। তবে সাবান নির্বাচনের ক্ষেত্রে এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে।
> অসুস্থ বোধ করলে এড়িয়ে চলতে হবে জনবহুল এলাকা। একইসঙ্গে অসুস্থ ব্যক্তিকে কোয়ারান্টাইনে তথা একাকি থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। ভাইরাস প্রতিরোধে কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদেরও এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।
> যে কোনো ব্যক্তির হাঁচি কাশি থেকে নিজেকে অন্তত তিন ফুট দূরে থাকার পরামর্শ তাদের। তবে শুধুমাত্র হাঁচি কাশিতে আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর, শ্বাস কষ্ট ও হাঁচি কাশি দেখা দিলে শিগগিরই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ।
> মুখ, চোখ, নাকে স্পর্শ থেকে দ্রুত ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে। তাই নাক, মুখ ও চোখে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
> সঙ্গে রাখতে হবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। সাবান ও পানির অপর্যাপ্ততা দেখা দিলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে যেসব স্যানিটাইজারে ৬০ শতাংশ এলকোহল রয়েছে শুধুমাত্র সেগুলোই ব্যবহার করা উচিৎ। শুধু হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলেই হবে না। হাতের দুই পাশ, আঙ্গুলের মাঝখানে ও নখ ভাল করে পরিষ্কার করতে হবে।
> বাসায় দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্র মজুদ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কোন কারণে বাসায় কয়েকদিন অবস্থানের দরকার হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করে রাখা উচিত। তবে এ ক্ষেত্রে মাস্ক মজুদের কোন প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন তারা।
> করোনাভাইরাস নিয়ে ভীত না হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কিছু পরামর্শ মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেছেন। সেগুলো হল-
* নিয়মিত জীবাণুনাশক, সাবান বা হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়া উচিত।
* কাশি বা হাঁচি দিচ্ছেন এমন ব্যক্তি থেকে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন।
* হাত না ধুয়ে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
* হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় টিস্যু বা হাতের কনুই দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
* যেখানে সেখানে থুথু ফেলা যাবে না।
* রান্না করার আগে ভালো করে খাবার ধুয়ে নিতে হবে।
* যে কোনো খাবার ভালো করে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে।
* কাপড় একবার ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন।
* বাড়ি এবং কর্মক্ষেত্র নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
* বাইরে ব্যবহৃত জুতা ঘরে ব্যবহার করা যাবে না। খালি পায়ে হাঁটা যাবে না।
* পরিচিত বা অপরিচিত ব্যক্তির সাথে হাত মেলানো বা আলিঙ্গন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
* জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। অন্যের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে।
* স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ অনুসরণ করে নিরাপদ থাকাই উত্তম পন্থা।
* অসুস্থ বোধ করলে বাড়িতে অবস্থান করা উত্তম।
* জনাকীর্ণ স্থানে সতর্ক থেকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
* শিশু, বৃদ্ধ ও ক্রণিক রোগীদের অধিকতর সতর্ক থাকতে হবে।
* নিজেকে নিরাপদ রাখতে আপাতত বিদেশ ভ্রমণ না করাই ভালো।
> করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সন্দেহ, লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে সরাসরি জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সেক্ষেত্রে আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে ফোন করলে তারা বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবেন।