নিজের ১৭ মাস বয়সী সন্তানকে লিঙ্গ নিরপেক্ষ হিসেবে বড় করছেন এক দম্পতি। এমনকি শিশুটির দাদা-দাদির কাছে প্রায় এক বছর ধরে সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় গোপন করেছেন তারা। ওই দম্পতির দাবি, সন্তান যেন অচেতনভাবেই কোনো লিঙ্গ পক্ষপাত না হয়ে যায়, সে কারণেই এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ইংল্যান্ডের ক্যানশ্যাম এলাকার হবিট হামফেরি (৩৮) ও জ্যাক ইংল্যান্ড জন (৩৫) দম্পতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, সন্তানের জন্য তারা ছেলে-মেয়ে উভয়ের পোশাক কেনেন। তাকে দুই ধরনেরই পোশাক পরানো হয়।
জানা গেছে ওই দম্পতি সার্কাস দেখানোর কাজ করেন। আর তারা থাকেন ভাসমান এক নৌকার ঘরে। সন্তানের নাম তারা রেখেছেন অনুশ। জানা গেছে, ১১ মাস বয়সে অনুশের নানি তার লিঙ্গ পরিচয় জানতে পারেন। সেটাও অনুশের ন্যাপি পরিবর্তন করে দেওয়ার সময়।
নাম রাখার ক্ষেত্রেও ওই দম্পতি চেষ্টা করেছেন, সন্তানের এমন নাম খুঁজে পাওয়ার, যা দিয়ে বোঝা যাবে না তার লিঙ্গ পরিচয়। ওই দম্পতি জানান, সন্তানকে পক্ষপাতহীন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার লিঙ্গ নির্ধারণ না করে বড় করে তোলার ব্যাপারে ভেবেছি। আমাদের মনে হয়েছে, এতে করে সন্তান লিঙ্গ পরিচয়ের ফ্রেমে আটকে না থেকে সবাইকে সমান হিসেবে ভাবতে পারবে।
তারা আরো বলেন, আমরা তাকে কিছু বানানোর চেষ্টা করছি না। আমরা চাই, সে যেন তার মতো হয়। হবিট হামফেরি বলেন, অবচেতনভাবেই লিঙ্গগত পক্ষপাত কাজ করে। কিন্তু আমি যখন গর্ভবতী হই, তখনই আমরা আলোচনা করি যে, কীভাবে লিঙ্গগত পক্ষপাতিত্ব থেকে আমরা দূরে থাকবো।
তিনি আরো বলেন, সে কারণে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি যে, আমরা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় মানুষের কাছে জানাবো না। এজন্য তাদের নাম সেভাবে নির্ধারণ করেছি। আর তাকে আমাদের সন্তান হিসেবে বড় করছি।
তিনি আরো বলেন, অনেকেই বলে যে গোলাপি রঙ কেবল মেয়েদের জন্য আর নীল রঙ ছেলেদের জন্য। অথচ আমরা সব রঙের পোশাক তাকে পরিয়ে রাখি। এমনকি আমার মা ১১ মাস বয়সে আমার সন্তানের ন্যাপি পরিবর্তন করতে গিয়ে অনুশের লিঙ্গ পরিচয় জানতে পারে।
তিনি আরো বলেন, প্রথমবার সন্তান হওয়ার পর এমনিতেই অনেক ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। তার ওপর সন্তানের পরিচয় গোপন করার কারণে অনেকের কাছে সেটা অপছন্দনীয় হয়ে দেখা দেয়। তবে এসব সমস্যা মোকাবিলা করতে গিয়ে অনেক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এই নারী আরো বলেন, আমাদের সন্তান দেখা যাচ্ছে ছেলে-মেয়ে উভয়েরই খেলনা নিয়ে খেলা করছে। সে একই সঙ্গে চা বানানোর খেলনা পছন্দ করছে, আবার মোটরবাইকও তার পছন্দের। সে কারণে বড় হয়ে সে নিজের কোন লিঙ্গ নির্ধারণ করতে চাইবে সেই সিদ্ধান্তটা সে নিজে নেবে, আমরা কেবল ওকে বড় করে তুলছি।